প্রকল্প ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ
চট্টগ্রামের প্রকল্পগুলোর পেছনে জাপান ও জিই ভার্নোভার ইন্ধন
জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের ওপর একাধিক কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প চাপিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে আমদানিকৃত জ্বালানির অস্থিতিশীল বাজারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে দেশের অর্থনীতি। পরিবেশ দূষণকারী প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে সুমিতোমো, মিৎসুবিশি, জেরা ও জিই ভার্নোভার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে আর্থিকভাবে জিম্মি করতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ







জাপান
wdt_ID | প্রতিষ্ঠান | প্রকল্প | অংশীদারিত্ব | সক্ষমতা | সক্ষমতার মালিকানা |
---|---|---|---|---|---|
1 | জেরা (সামিটের সামিটের ২২% ইকুইটি শেয়ারহোল্ডার%) | মাতারবাড়ি সামিট এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র (সামিটের ৫৫% যৌথ উদ্যোগের শেয়ার, তাতে জেরা এর কার্যকরী ইকুইটি শেয়ার ~১২%) | ১২% | ২৪০০ | ২৪০০ |
3 | মিৎসুই অ্যান্ড কো | সিপিজিসিবিএল-মিৎসুই ৫০০-৬৩০ মেগাওয়াট এলএনজি ভিত্তিক সিসিসিপি | ৫০% | ৫০% | ৩১৫ |
5 | ইতোচু | আনোয়ারা ৭০০ মেগাওয়াট সিসিসিপি | অজানা | ৭০০ | অজানা |
জিই ভার্নোভা
চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত তিনটি এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাথে যুক্ত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিই ভার্নোভা
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন-নিউট্রাল হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও জ্বালানি রূপান্তর কৌশলের অংশ হিসেবে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুতের মতো পরিবেশ দূষণকারী প্রযুক্তি ব্যবহার করছে জিই ভার্নোভা।
জ্ঞাত তথ্যানুসারে, চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদেশী স্পন্সরশিপের ৫৭শতাংশই আসছে জাপানি প্রতিষ্ঠান থেকে।
অর্থায়ন, প্রকৌশল ও নির্মাণ (ইপিসি) সহ একাধিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জাপানি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। এতেই স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনায় জাইকার সম্পৃক্ততায় এক ধরণের কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের দ্বন্দ্ব বিদ্যমান।
২০৫০ সালের মধ্যে নেট জিরো কার্বন নিঃসরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও মিৎসুবিশি, জেরা, ও সুমিতোমোর মত প্রতিষ্ঠানগুলো চট্টগ্রামে জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণে তাদের বিনিয়োগ করছে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা ও চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধের লক্ষ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পগুলো বন্ধের দাবি জানিয়ে জিই ভার্নোভা মিৎসুবিশি, জেরা, ও জাইকা সহ অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইমেইল করুন।
প্রকল্পসমূহ
wdt_ID | নাম | সক্ষমতা (মেগাওয়াট) | সমাপ্তির বছর | অর্থদাতা | জেলা |
---|---|---|---|---|---|
1 | আনোয়ারা ৫৯০ মেগাওয়াট সিসিসিপি | ৫৯০ | ২০২৭ | ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজেস | চট্টগ্রাম |
2 | আনোয়ারা ৬০০ মেগাওয়াট সিসিসিপি | ৬০০ | ২০২৬ | জালালাবাদ ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি | চট্টগ্রাম |
3 | আনোয়ারা ৭০০ মেগাওয়াট সিসিসিপি | ৭০০ | - | কেপকো, এ.কে.এইচ পিপি, ইতোচু | চট্টগ্রাম |
4 | আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (পরিবর্তন প্রকল্প) | ৪৫০ | ২০২৮ | আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিঃ (এপিএসসিএল) | চট্টগ্রাম |
5 | আশুগঞ্জ ৬০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (পরিবর্তন প্রকল্প) | ৬০০ | ২০৩১ | আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিঃ (এপিএসসিএল) | চট্টগ্রাম |
6 | বি-টাইপ এরিয়ায় আশুগঞ্জ ৬০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (১ম পর্যায়) | ৬০০ | ২০৩৭ | আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিঃ (এপিএসসিএল) | চট্টগ্রাম |
7 | বি-টাইপ এরিয়ায় আশুগঞ্জ ৬০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (২য় পর্যায়) | ৬০০ | ২০৪১ | আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিঃ (এপিএসসিএল) | চট্টগ্রাম |
8 | বোয়ালখালী ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (১ম পর্যায়) | ৪০০ | ২০৩৮ | পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল) | চট্টগ্রাম |
9 | বোয়ালখালী ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (২য় পর্যায়) | ৪০০ | ২০৪১ | পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল) | চট্টগ্রাম |
10 | সিপিজিসিবিএল-মিৎসুই ৫০০-৬৩০ মেগাওয়াট এলএনজি ভিত্তিক সিসিপিপি | ৬৩০ | ২০২৮ | কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল), মিৎসুই অ্যান্ড কোং | চট্টগ্রাম |
*CCPP = Combined Cycle Power Plant
মানচিত্রে চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর অবস্থান।

ব্যয়বহুল এলএনজি’র বিস্তার: বিদেশিদের এলএনজি-সংক্রান্ত স্বার্থ যেভাবে বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি তৈরি করছে
বর্তমানে বাংলাদেশ বেশ বড় ধরনের একটি জ্বালানী সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যে আমদানিকৃত জীবাশ্ম গ্যাস থেকে তৈরি বিদ্যুতের ওপর অতিনির্ভরশীলতার ফলেই দেশে বেড়েছে লোডশেডিংও।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের উচিৎ ছিলো অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারেরি উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য দেশীয় জ্বালানিকে গুরুত্ব দেয়া। অথচ, তা না করে বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পরিবেশ বান্ধব, সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে পারে, যা পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের জন্য কমমূল্যে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারে।