জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের যতো সমস্যা
বাংলাদেশে কার্বন বিপর্যয়
জলবায়ুর ক্ষতি
বাস্তবায়িত হলে প্রকল্পগুলো থেকে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমপরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরিত হবে।
প্রকল্পগুলোর ধ্বংসাত্মক প্রভাব এতোটাই ব্যাপক হবে যে, তা কার্বন নিঃসরণ রোধে জাপানের গৃহীত ‘নিঃসরণ হ্রাস ২০৩০’ লক্ষ্যেরও দ্বিগুণ।
পরিহারযোগ্য মৃত্যু
প্রতি বছর জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে ৭৩,০০০ মানুষ মারা যান। জীবাশ্ম জ্বালানি পরিহার করলেই তাদের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।
অতিরিক্ত ব্যয়
২০৩০ সাল নাগাদ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতেই বাংলাদেশের বার্ষিক খরচ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এলএনজি থেকে প্রতি গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের খরচ হবে গড়ে ৯৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে এই ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দেশের ২০২১-২২ বাজেটের ছয় গুণ।
ঝুঁকির বিবরণ
চট্টগ্রামে নয়নাভিরাম সৈকত ও দেশের সর্বশেষ রেইনফরেস্ট অবস্থিত। জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে এই অঞ্চল ও এর বাসিন্দারা। অথচ, বায়ু ও সৌর শক্তির মতো নবায়নযোগ্য উৎসের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এসব উৎসের জন্য ব্যয়বহুল ও পরিবেশ ধ্বংসকারী জ্বালানি আমদানিরও প্রয়োজন হবে না।
জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি
গ্রেট এশিয়ান এলিফ্যান্ট, ক্লাউডেড লেপার্ড ও চাইনিজ প্যাঙ্গোলিন সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে অন্তত ২৬টি বিশ্বব্যাপী বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি রয়েছে।
চট্টগ্রাম
নয়নাভিরাম সৈকত
বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার। সুনীল জলরাশী, সোনালী বালুকাবেলা ও উষ্ণ আবহাওয়ার টানে প্রতি বছর অন্তত ১ কোটি পর্যটক ছুটে যান ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এই সৈকতে।
মাতারবাড়ী ২: একটি অপ্রয়োজনীয় ও দূষণকারী বিদ্যুৎকেন্দ্র
চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে তর্কসাপেক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকর ছিল ১,২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন মাতারবাড়ি ২। ২০২১ সালের জি সেভেন সামিটে কয়লা খাতে অর্থায়ন বন্ধের অঙ্গীকার করেছিল জাপান। কিন্তু নির্মিত হতে যাওয়া এই কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ হতে যাচ্ছিলো। ইতোমধ্যেই মাতারবাড়ি ১ স্থানীয় জলাশয়ের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপনা নির্মানের জন্য সাধারণ মানুষকে তাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেইসাথে তারা তাদের জীবন-জীবিকা হারিয়েছে।
জাইকাকে মাতারবাড়ি ২ প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ করা হয়েছিল।
১.৯ বিলিয়ন ডলার
চট্টগ্রাম অঞ্চলে জ্বালানি উৎপাদন পরিকল্পনাঃ সম্ভাব্য কার্বন বিপর্যয়
পাহাড়, গহীন বন ও নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকতের জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন বিপর্যয়। চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কিছু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে।
তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশের মোট জীবাশ্ম জ্বালানির দুই তৃতীয়াংশই পুড়বে এই চট্টগ্রামে।