যে কার্বন বিপর্যয়ের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সাধ্য নেই আমাদের

আসুন, প্রাণপ্রকৃতি, জনস্বাস্থ্য, জাতীয় অর্থনীতি ও বৈশ্বিক জলবায়ু রক্ষার্থে বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানীমুক্ত রাখি।

২০২২ সালের জুনে জাপান সরকার ঘোষণা করে যে জাপান মাতারবাড়ি ২ কয়লা প্রকল্প অর্থায়ন করবে না। বাংলাদেশ সরকারও মাতারবাড়ি ২ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। মাতারবাড়ি ২ এর পরিবর্তে এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে সরকার।

মিৎসুবিশি, জেরা, জাইকা ও জিই ভার্নোভা চট্টগ্রামে জীবাশ্ম গ্যাস এবং এলএনজি দূষণের সাথে জড়িতযার জলবায়ুগত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা বাংলাদেশের পক্ষে তো সম্ভব নয়ই, এমনকি গোটা বিশ্বের পক্ষেও অসম্ভব। একইসাথে প্রকল্পটি জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

» আরো দেখুন

চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২০ গিগাওয়াট। এই প্রকল্পগুলো:

Icon - Global warming
আমাদের বৈশ্বিক ঊষ্ণায়ন কমানোর প্রচেষ্টাকে ব্যহত করবে।
Coastal designer icon
বাস্তুতন্ত্র, জলাশয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিপর্যয় বয়ে আনবে।
Money bag icon

অর্থনীতি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের ওপর অসামঞ্জস্যপূর্ণ বোঝা হয়ে দাঁড়াবে

স্থানীয় বাসিন্দাদের গল্প

“আমি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাঁচার কোনো উপায় নাই। কয়লা প্রকল্প আর এলএনজি টার্মিনালের কাজ শুরু হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।”

– আবদুস সালাম কাকলী, সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী

"এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পের মধ্যে আমাদের বসতবাড়ি পড়ছে, পুকুর পড়ছে, লবণ ও মাছ চাষের জমি পড়ছে, আমরা এখন কি করবো?”

– হামিদ হোসেন, মাছ চাষী ও জমির মালিক, মাতারবাড়ি, চট্টগ্রাম।

“কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজের কারণে বালু সরে যাওয়ায় আমার বাড়ি ধসে গেছে।”

সালেহা বেগম, মাতারবাড়ি, বাংলাদেশ

“আমাদের এলাকায় আগে অনেক কাজ ছিল। চিংড়ি চাষ, বর্গা চাষ, মাঝি, লবণ চাষ, এরকম অনেক কাজ ছিল। এখন প্রকল্প আসার পর আমাদের আর কোনো কাজ নেই।”

– হুমাইরা, জাপানের অর্থায়নে মাতারবাড়ী ১ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাস্তুচ্যুত

চট্টগ্রাম সহ সমগ্র বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির কবল থেকে মুক্ত রাখতে এগিয়ে আসুন!

স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা ও চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধের লক্ষ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পগুলো বন্ধের দাবি জানিয়ে জিই ভার্নোভা মিৎসুবিশি, জেরা, ও জাইকা সহ অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইমেইল করুন।

মানচিত্রে চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর অবস্থান।

Bangladesh map with project locations

ব্যয়বহুল এলএনজি’র বিস্তার: বিদেশিদের এলএনজি-সংক্রান্ত স্বার্থ যেভাবে বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি তৈরি করছে

বর্তমানে বাংলাদেশ বেশ বড় ধরনের একটি জ্বালানী সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যে আমদানিকৃত জীবাশ্ম গ্যাস থেকে তৈরি বিদ্যুতের ওপর অতিনির্ভরশীলতার ফলেই দেশে বেড়েছে লোডশেডিংও।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের উচিৎ ছিলো অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারেরি উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য দেশীয় জ্বালানিকে গুরুত্ব দেয়া। অথচ, তা না করে বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ পরিবেশ বান্ধব, সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে পারে, যা পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের জন্য কমমূল্যে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারে।